শুক্রবার | ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



সত্যের পথে অবিচল | ২৪ ঘণ্টা বাংলা সংবাদ

ইউপি নির্বাচনে হেরে এমপি সরওয়ার জাহান বাদশাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ!

ইউপি নির্বাচনে হেরে এমপি সরওয়ার জাহান বাদশাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ!

দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুরে আসনের এমপি সরওয়ার জাহান বাদশাহর বিরুদ্ধে ৩ নম্বর ফিলিপনগর ইউপি নির্বাচনে নৌকার পরাজিত প্রার্থী ফজলুল হক কবিরাজের অভিযোগ সত্য নয় বলে জানা গেছে। নৌকার প্রার্থী নির্বাচিত হতে না পরে নিজ ঢাকতে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে এলাকার মানুষ মনে করছে।


কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর পাঠানো ফজলুল হক কবিরাজ অভিযোগ করেন, ফ্লাট ও টাকা নিয়ে তাকে (ফজলুল হক কবিরাজ) হারিয়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এ অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা। বরং নিজের কৃতকর্ম ঢাকার জন্য এ সব অপপ্রচার করেছে।

তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ফজলুল হক কবিরাজ যে সব অভিযোগ করেছে তা স্ব-বিরোধী ও অসত্য।
১) এমপি সরওয়ার জাহান বাদশাহ ঢাকা সুপ্রিম কোর্টে প্যাকটিস করার সুবাদে ফিলিপনগরে বসবাসের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি ফ্লাট কেনার জন্য আরমা রিয়েল স্টেট কোম্পানির সাথে ২০১৭ সালের ৭ মার্চ চুক্তিবদ্ধ হন। আর ফজলুল হক কবিরাজ ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হন ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর।

২) ফজলুল হকের অন্যতম অভিযোগ, তাকে পরাজিত করার জন্য এমপি সরওয়ার জাহান বাদশাহর পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগ নেতা ওরুস কবিরাজকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করান এবং নৌকাকে ফেল করান। এটা পুরোপুরি মিথ্যা। ওরুস কবিরাজ ফজলুল হক কবিরাজের নিকট আত্মীয় এবং একই কবিরাজ বংশের লোক। ওরুস কবিরাজ এমপির লোক নয়। নির্বাচন কমিশন দৌলতপুর অফিসের তথ্য অনুযায়ী ওরুস কবিরাজ ভোট পেয়েছেন ৩৫৪৬টি। আর নৌকার পেয়েছে ৪৫৯৩। নৌকার প্রার্থীর আত্মীয় ওরুস কবিরাজ ও নৌকা প্রাপ্ত ভোট একত্র করলে নৌকার সর্বোচ্চ ভোট হতো; চশমার প্রাপ্ত ভোট ৭১৪০ এর চেয়ে বেশি ভোট হতো। নৌকা নির্বাচিত হতে পারতো। ওরুস কবিরাজকে নির্বাচন থেকে সরাতে না পারা এবং নৌকার প্রার্থীর ইমেজ নষ্ট হওয়ার কারণে মূলত নৌকার নির্বাচিত হতে পারেনি।


৩) ফজলুল হক উল্লেখ করেছেন সরওয়ার জাহান বাদশাহ নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করেছেন। এটাও মিথ্যা। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে সরওয়ার জাহান বাদশাহ সরাসরি ভোটের মাঠে নামেননি। তবে এমপি’র ছেলে, তার নিজের লোক বলে পরিচিত সবাই নৌকার পক্ষে ভোটে করেন।

৪) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: হায়দার আলী এমপির নিজস্ব লোক উল্লেখ করে অভিযোগ করেন তিনি নৌকার বিপক্ষে ভোট করেছিল। এ বিষয়ে হায়দার আলী বলেন, তিনি নৌকার পক্ষে ভোট করেছেন।


৫) ‘ফিলিপনগরের ইকবাল মাস্টার, সাহাব মাস্টার, মফেজ পুলিশ, বশির উদ্দিন বিরাজ, রাজু আহমেদ, হাবিল, তৌহিদুল, রুবেলে, জিল্লুর, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ইসহাক আলী ও ইমারুল মাস্টার সেন্টুর টাকার নিয়ে সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করে’ বলে পরাজিত নৌকার প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগে অভিযোগ করেন। এটাও মিথ্যা। বরং জনবিচ্ছিন্নতা ও মানুষের সাথে খারাপ সম্পর্কের কারণে মানুষ নৌকার প্রার্থী থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেয়। উল্লেখিত নামের অনেকেই আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত নয। গণভাবে সাধারণ মানুষের নাম উল্লেখ করে জেলা আওয়ামী লীগে অভিযোগ করে। এর মাধ্যমে নিজের জনবিচ্ছিন্নতাই প্রমান করেছে।

৬) নাসির উদ্দিন ও মাহাবুল মাস্টারকে এমপির লোক উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে তারা চশমার পক্ষে ভোট করেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুজনই নৌকার পক্ষে ভোট করেছে। আর নাসির উদ্দিন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন রিমনের চাচা এবং প্রতিবেশি। মূলত নৌকার প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন থাকার কারণে সবার বিরুদ্ধে ঢালাও এ ধরণের অভিযোগ করেছেন।

৭) পরাজিত ফজলুল হক কবিরাজ অভিযোগ করেছেন সরওয়ার জাহান বাদশাহ নইমুদ্দিন সেন্টুর ভাই আরমা গ্রুপের চেয়ারম্যন আ: রাজ্জাকের সাথে যোগসাজস করে নৌকাকে হারিয়ে দিয়েছে। সরওয়ার জাহান বাদশাহ এমপি ঘনিষ্ট এলাকার লোক হিসাবে মানুষের সঙ্গে এমপির সম্পর্ক রয়েছে, একই সম্পর্ক আ: রাজ্জাকের সাথেও রয়েছে। এর বেশি নয়। এখানে উল্লেখ্য, ফজলুল হক কবিরাজই আরমা কোম্পানিতে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন।

দৌলতপুরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২৮ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বাচাইয়ের ক্ষেত্রে তুঘলগি কান্ড ঘটনানো হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের সব রানিং চেয়ারম্যানকে ঢালাওভাবে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যাদের অনেকের বিরুদ্ধে সরকারী অনুদানের টাকা চুরি, জন্ম সনদ, নাগরিক সনদ ও গরু বিক্রি সনদ বিক্রির বাণিজ্য অভিযোগ ছিল। অনেকে বয়েসের ভারে ন্যূজ তাদেরও নোমিনেশন দেয়া হয়েছিল। এ কারণে দলের নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্মরণকালের বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এবং ১৪ ইউনিয়নের ৯টিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়।

নোনিমেশন দেয়া ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাবে নৌকার এমন পরাজয়ের ঘটনা ঘটেছে। দৌলতপুর আওংয়ামী লীগ বহু ধারায় বিভক্ত ও ক্ষত-বিক্ষত এবং বিপর্যস্ত- এই নোমিনেশন ও অভিযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। নোমিনেশন দেয়ার ক্ষেত্রে দৌলতপুর আওয়ামী লীগকে পাস কাটিয়ে কে কোন উদ্দেশ্যে এমন নোমিনেশন দিলো-এ বিষয়টি এখন খুঁজে বের করা প্রয়োজন বলে মনে করছে দৌলতপুরের মানুষ।

Facebook Comments Box

Posted ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১

protidinerkushtia.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

মোঃ শামীম আসরাফ, সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :

ঝাউদিয়া বাবলু বাজার, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ফোনঃ +৮৮ ০১৭৬৩-৮৪৩৫৮৮ ই-মেইল: protidinarkushtia@gmail.com

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
error: Content is protected !!