সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়া
সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়া
বাংলা সাহিত্যের আকাশে তিনি ধ্রুবতারা, তার কবিতা গান, উপন্যাস ও গল্পে বাঙালি জেনেছে বীরত্বের ভাষা, দ্রোহের মন্ত্র। (২৫ মে) শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মধ্যে দিয়ে পালিত হলো।
তরিকতে আহলে বাইত বাংলাদেশ (কেন্দ্রীয় সংসদ) এর আয়োজনে এবং কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া দবির উদ্দিন মোল্লার রেলগেটের পাশে ডা.সামছুল আলমের সদর আশ্রমের সহযোগিতায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এঁর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বিদ্রোহীর শতবর্ষ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ও সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা.সামছুল আলম।
আলোচনা সভায় সদর আশ্রমের কর্মকর্তাবৃন্দ নজরুলের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোকপাত করেন। জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলা কবিতায় নজরুলের আবির্ভাব একেবারেই উল্কার মতো। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়ে সমস্ত আকাশকে কীভাবে রাঙ্গিয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে। কোন সঞ্জীবনি মন্ত্রে তিনি উচ্চকন্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না/ অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না।
তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
নজরুলের প্রেম, বিয়ে বিচ্ছেদ, গ্রেফতার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী রয়েছে কুমিল্লা শহরে। কুমিল্লা জেলার দৌলতপুরে সৈয়দা খাতুন নামে এক কিশোরীকে তিনি ভালোবেসেছিলেন। নাম রেখেছিলেন ‘নার্গিস’। ১৯২১ সালে নির্ধারিত বিয়ের দিনটিতেই তাদের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। নার্গিসকে নিয়ে তিনি লিখেন ‘বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে’ অথবা ‘আজও মধুরও বাঁশরি বাজে।’ নজরুলের স্ত্রী প্রমীলার বাড়িও কুমিল্লাতে।
কাজী নজরুল ইসলাম (১১ জ্যৈষ্ঠ,১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের পুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।
(কাজী ফকির আহমেদ এর ২য় স্ত্রী জাহেদা খাতুন)। জাহেদা খাতুনের চার পুত্রের অকাল মৃত্যুর পর নজরুলের জন্ম হয় বলে তার নাম রাখা হয়-দুখু মিয়া। বাল্যকালে তাঁকে ‘ত্যাঁরা ক্ষ্যাপা’ ও ‘নজর আলী’ নামেও ডাকা হতো। সাহিত্যে তিনি ‘নুরু’ নামও ব্যবহার করেছেন। মাত্র ৮ বছর বয়সে পিতার মৃত্যু (১৯০৭) হলে তিনি চরম দারিদ্র্যে নিপতিত হন।
কাজী নজরুল ইসলাম ২৯ আগষ্ট, ১৯৭৬ সালে(১২ ভাদ্র,১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে মাত্র ৭৭ বছর বয়সে ঢাকার পিজি হাসপাতালে ইহলোক ত্যাগ করেন। তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে বিকেল ৫:৩০ ঘটিকায় সমাধিস্থ করা হয়।
Posted ৬:১১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
protidinerkushtia.com | editor