মঙ্গলবার | ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



সত্যের পথে অবিচল | ২৪ ঘণ্টা বাংলা সংবাদ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

নিজস্ব প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের প্রায় ৪ কি. মি. এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙনে কয়েক হাজার একর আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি ভাঙন রোধে দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের। ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পদ্মা নদীতে আকষ্মিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙনে অনেকের বসতবাড়ি ও কয়েক হাজার একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা, ভুরকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নদীভরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
কোলদিয়াড় কান্দিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাটখোলাপাড়া জামে মসজিদ, জুনিয়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়াদহ বাজারসহ অসংখ্য ঘর-বাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মা গর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।
পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৯নং ওয়ার্ডের হাটখোলাপাড়া এলাকার হাসানুজ্জামান রাজা জানান, হঠাৎ করে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে প্রায় ৪ কি. মি. এলাকা জুড়ে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পদ্মার ভাঙনে তার আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে অচিরেই তাদের ঘর-বাড়ি নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই কথা জানিয়েছেন বানাত আলী, জাহিদ হোসেন, খলিলুর রহমান, আব্দুল মজিদ ও রাকিব হোসেনসহ অনেকে। তাদের প্রত্যেকের আবাদি জমির উঠতি ফসল বাদাম সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলি জমি নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। পদ্মা নদীর ভাঙনে ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে দিন-রাত কাটছে তাদের। মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, পদ্মা নদীতে এবছর আগাম পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙন ও তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী ভাঙনে তার ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপাড়া ও কোলদিয়াড় ৩টি ওয়ার্ডের কয়েক হাজার বিঘা আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
এরআগে ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়েছে অসংখ্য পরিবার। বর্তমানে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে ৩টি ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারি স্থাপনা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে দৌলতপুরের মানচিত্র থেকে মরিচা ইউনিয়ন নিশ্চিহ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভাঙন রোধে সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি। পদ্মা নদীর ভাঙন কবলিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শ করে ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দিন। এসময় কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. ক. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ জানান, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ ও স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভাঙন ঠেকাতে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে তা রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এছাড়াও ওইসব এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন,পদ্মার ভাঙন রোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করে ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে আশ্বাস নয়, সর্বগ্রাসী পদ্মার গ্রাস থেকে এলাকাবাসীকে বাঁচাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীসহ পদ্মা পাড়ের অসহায় মানুষের।
Facebook Comments Box


Posted ৪:০৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১

protidinerkushtia.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

মোঃ শামীম আসরাফ, সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :

ঝাউদিয়া বাবলু বাজার, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ফোনঃ +৮৮ ০১৭৬৩-৮৪৩৫৮৮ ই-মেইল: protidinarkushtia@gmail.com

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
error: Content is protected !!