কুষ্টিয়ায় বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩ বিভিন্ন কটাক্ষ, অশ্লীল বার্তা, এরপর স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কালো হাত চলে গেল শেখ মুজিবের ভাস্কর্যে! ভাঙচুর হলো ভাস্কর্য। ফের কুষ্টিয়ায় বিপ্লবী বাঘা যতিনের ভাস্কর্যে পড়ল সেই কালো হাত!
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সংগ্রামী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানসহ (৩৫) তিনজনকে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর আরাফাত আজ শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া বাকি দুজনের নাম সবুজ হোসেন (২০) এবং হৃদয় আহমেদ (২০)। এ ছাড়া জানা গেল বাচ্চু (৩২) নামের একজন পলাতক।
তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জানা গিয়েছে, আনিসুরের সঙ্গে কয়া মহাবিদ্যালয় (কলেজ) কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই নাকি তিনি সহযোগীদের নিয়ে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সড়কের পাশে স্থাপিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করা হয়।
মোদ্দা কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার যদি অপশক্তির এই কালো হাত গুঁড়িয়ে দেয়ার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে এই ঘটনা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকবে। এবং শুধু এই ঘটনাই নয়, দেশে সাহিত্য- সংস্কৃতি বলতে থাকবে না কিচ্ছু!
মুজিবুর রহমান এবং বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর হল কুষ্টিয়ায়। গোঁড়া/ ধর্মান্ধ ইসলামপন্থী দলগুলির দাবি, মুসলিম সংখ্যাগুরু বাংলাদেশে কোনও ভাস্কর্য থাকবে না।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা ঘটনায় এর আগে প্রতিবাদ কর্মসূচি, আন্দোলনেও কাজ হয়নি কিচ্ছু! দুর্বৃত্তের হাত আরো লম্বা হয়েছে! বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের পর কালো হাত চলে গেছে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যে!
এই মাস বাঘা যতীনের জন্মমাস। বাঘা যতীনের আসল নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর জন্ম কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়ায়। বাবার নাম উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম শরৎশশী।
শুক্রবার সকালে তীব্র ধিক্কারজনক এই ঘটনা নজরে আসে লোকের! ঘৃণ্য এমনই এক একটি ঘটনা হয়ে চলেছে বাংলাদেশে। মানবতার জয়গান গাওয়া লালন সাঁইযের জেলা কুষ্টিয়াতেই আবার ঘটল সেই ঘৃণ্য অপকর্ম।
জাতির জনকের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য এর আগে ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর চালায়। জাতির জনকের ভাস্কর্য ভাঙচুরের পরই গোটা বাংলাদেশ তথা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি ধর্মান্ধ, অপশক্তির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে। চলতে থাকে আলোচনা।
এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে দেশ, যখন দেশের স্বাধীনতা যিনি এনেছেন তাঁকেই কিনা পাহারা দিয়ে রাখতে হচ্ছে, যেন তাঁর ভাস্কর্যে কোন অপশক্তির হাত না পড়ে!
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে হাত দেয়া যে শুধু আওয়ামীলীগ বা শাসক দলের জন্য ক্ষতি তা কিন্তু নয়। এ ক্ষতি গোটা বাংলাদেশের।
Posted ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
protidinerkushtia.com | editor