কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। রাজারহাট ছিনাই ইউনিয়নের কিশোরী নবম শ্রেনীর ছাত্রী কে ঘড় থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ধর্ষন ও আহত করার ঘটনায় মামলার অগ্রগতি ও অপরাধীদের সনাক্ত এবং গ্রেফতার বিষয়ে স্থানীয় গনমাধ্যকর্মী দের ব্রিফ করেন প্রেস কনফারেন্সের সম্মানীত সভাপতি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম।
আজ ৯ ই আগষ্ট রবিবার দুপুড় ১২ টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে স্থানীয় গনমাধ্যকর্মী, ইলেকট্টনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সামনে রাজারহাট ছিনাই ইউনিয়নে কিশোরী ধর্ষন মামলার অগ্রগতি নিয়ে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান। বক্তব্যের শুরুতে তিনি উপস্থিত গনমাধ্যমকর্মীদের জেলা পুলিশ কুড়িগ্রামের পক্ষে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট থানাধীন ছিনাই ইউনিয়নের
মহিধর খন্ডক্ষেত্র গ্রামে দস্যুতা ও একই সাথে গৃহমালিকের নাবালিকা কন্যাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষনের ঘটনায় রাজারহাট থানার মামলা নং- ১৬ তারিখ ২৭-০৭-২০২০খ্রীঃ ধারা ২০২০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ( সং-০৩) এর ৭/৯(১)/৩০ তৎসহ ৩৯৪ পেনাল কোড রজু হয়। মামলা রজুর পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহ পুলিশ মনিটরিং সেল এর তদারকি কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করা হয়। এরপর পুলিশের আলাদা আলাদা অভিযানে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী- লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগড় এলাকার করিমের পুত্র মোঃ আব্দুল মালেক(৩৮) কে গত ০৬-০৮-২০২০ইং গ্রেফতার করা হয়। গত ০৭-০৮-২০২০ইং রাজারহাট ছিনাই এলাকার উমর আলীর ছেলে মোঃ আব্দুস সালাম (৪২) কে চর ভূরুঙ্গামারী থেকে এবং আবুল কালাম আজাদকে নাগেশ্বরী থানাধীন রায়গন্জ ইউনিয়নের হাজীর মোর এলাকা থেকে গত ০৮-০৮-২০২০ইং পৃথক অভিযান পরিচালনা করে আটক করা হয়। আটক ১ ও ২ আসামী কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাদের (০৫) পাচ দিনের রিমান্ড আবেদন মন্জুর করেন। আসামী ৩ আবুল কালাম আজাদকে অদ্য ০৯-০৮-২০২০ইং বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড এর আবেদন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
পুলিশ সুপার বলেন, এই মামলার যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করে অল্প সময়ের মধ্যে আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই গভীর রাতে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে একদল দুর্বৃত্ত বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে আহত করে এবং বাড়ির পাশে একটি জঙ্গলে ধর্ষণ করে । এছাড়াও দুর্বৃত্তদের হামলায় ধর্ষিতা ছাত্রীর বাবা রেজা শাহ পাহলভি (৪৮) ও মা শাহনাজ পারভীন (৩৮) গুরুতর আহত হন। আহত ছাত্রী ও তার পিতা-মাতা এখনো কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় পরদিন অজ্ঞাত পরিচয় ৪ জনকে আসামী করে রাজারহাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আসামী গ্রেপ্তারের দাবীতে এলাকায় দু’দফা মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী।
প্রেস কনফারেন্স এ উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উৎপল রায় সহ পুলিশ মনিটরিং সেল এর দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্ধতন পুলিশ কর্নকর্তা ও রাজারহাট থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা সহ অন্যান্য পুলিশ অফিসারগন।
প্রেস কনফারেন্স শেষে উপস্থিত গনমাধ্যকর্মীদের সাথে খোলামেলা আলোচনায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম আসামী গ্রেফতারের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, তিন আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী পেলে ঘটনার পুরো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। পুলিশ মনিটরিং সেল গুরুত্বপুর্ন মামলার তদন্ত, আসামী সনাক্ত ও আটকে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। উল্লেখ্য গত সপ্তাহে জোড়া খুনের অন্যতম প্রধান পলাতক আসামী আলম কে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার গনমাধ্যমকর্মী দের মাধ্যমে জেলাবাসীকে আশ্বস্ত করেন, প্রত্যেক অপরাধীকেই আইনের আওতায় আনা হবে। জেলা পুলিশ কুড়িগ্রাম পুলিশ মনিটরিং সেলের তদারকিতে পলাতক আসামীদের ধরতে অভিযান প্রক্রিয়া চলমান । তিনি অতীতের সকল জটিল ও ক্লু লেস মামলার রহস্য উন্মোচন ও অপরাধী গ্রেফতার সহ মামলাগুলোর সুষ্ঠ তদন্ত শেষ করে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়েছে এ বিষয়গুলো সকলের সুূদৃষ্টি কামনা করেন।সংবাদ সম্মেলনে গনমাধ্যকর্মী ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ও সহযোগিতার জন্য পুলিশ সুপার সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আবারো ধন্যবাদ জানিয়ে সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষনা করেন।
Posted ১২:৪৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ আগস্ট ২০২০
protidinerkushtia.com | faroque