নিউজ ডেস্ক
লেখক, গবেষক, কলামিস্ট, সৈয়দ আবুল মকসুদ না ফেরার দেশে চলে গেছেন গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। মানবতাবাদকে জীবনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। সবসময় সেলাইবিহীন সাদা পোশাক পরতেন মহাত্মা গান্ধীর মতো। যে কোনো অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে রাজপথে নেমে আসতেন। তিনি সাংবাদিক-কলামিস্ট, গবেষক ও নাগরিক আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আবুল মকসুদ।
দীর্ঘ ১৮ বছর সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরেছিলেন আবুল মকসুদ। প্রতিবাদের পোশাক হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আন্দোলনে তিনি এই সাদা কাপড় পরতেন। কিন্তু কেন তিনি বেছে নিয়েছিলেন এই পোশাক? অনেকেই জানেন না সে প্রশ্নের উত্তর।
কেন তিনি সাদা পোশাক বেছে নিয়েছিলেন তা জানা যায় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের একটি লেখায়। ২০১৬ সালে দৈনিক প্রথম আলোতে আনিসুল হকের ‘লুঙ্গি’ শিরোনামে লেখায় রয়েছে সেই বর্ণনা। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলার প্রতিবাদে পশ্চিমা পোশাক ত্যাগ করে ভিন্নধর্মী এই পোশাক পরা শুরু করেছিলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই পোশাকই ছিল তার নিত্যসঙ্গী।
আনিসুল হক লিখেছেন- ‘ইরাকে মার্কিন হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের অগ্রগণ্য সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ সেলাই করা কাপড় বর্জন করেন। এটা এই অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্য- বিদেশিরা এই অঞ্চলে আসার আগে আমরা সেলাইবিহীন কাপড় পরতাম। ধুতি আর শাড়ি। ব্লাউজ ছিল না। লুঙ্গিতেও সেলাই ছিল না। ঠাকুরবাড়ি শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য ব্লাউজ, পেটিকোট ইত্যাদির প্রচলন করে। ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে এই মিথ্যা অজুহাতে মার্কিনরা হামলা চালায় এবং পুরো পৃথিবীটাকে অশান্ত করে তোলে, সৃষ্টি করে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ও কোটি মানুষের বেদনার কারণ। তারই প্রতিবাদে সৈয়দ আবুল মকসুদ দুই খণ্ড সেলাই-ছাড়া সাদা চাদর পরা শুরু করেন। তিনি এখনো সেই ব্রত পালন করে চলেছেন।’
সৈয়দ আবুল মকসুদের জন্ম ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে। তার কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটি ছিল পাকিস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির মুখপত্র। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন কিছুদিন। পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৮ সালের ২ মার্চ সংবাদ সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগে থাকা অবস্থায় চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। এর পর থেকে তিনি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে কলাম লিখতেন।
Posted ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
protidinerkushtia.com | Md Golam Kibria (Jibon)