মরহুম তোফাজ্জেল হোসেন ওরফে জিন্নাহ সাহেব ১৯৪৪ কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন ।তিনি ১৯৬৩ মেট্রিক এবং ১৯৬৫ সালে এইচএসসি পাস করে ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তাহার কর্মজীবনে সরকার বহুবার তাকে সম্মাননা পুরস্কার দিয়েছেন।
এছাড়া নিজ গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের সামাজিক কাজে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। লালনগর, কালিদাসপুর ,তালবাড়িয়া, পাককোলা ,কোদালিয়া, ইউসুফপুর ,আড়িয়া ,এই গ্রামগুলোতে সেই সময়ে গ্রামের শালিসে সুষ্ঠু বিচার করতেন । তিনি কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতেন না , সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল , তিনি শালিসে থাকলে সুষ্ঠু বিচার পাবেন । আজ এধরণের মানুষের বড়ই অভাব ।তিন ছিলেন সদা হাস্যজ্জল ,ক্রীড়াপ্রেমিক ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন ।সেই সময় গ্রাম এলাকায় পড়াশুনার হার অনেক কম থাকায় উনি সকল বয়সী ছেলেমেয়েদের কে স্কুলে যাবার জন্য উৎসাহ জোগাতেন এবং আদেশ করতেন । শিক্ষার হার ও মান উন্নয়নে তিনি যথেস্ট ভূমিকা রেখেছেন , গ্রামের মসজিদ ,ঈদগাহ গোরস্থান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সকল উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে উনার সম্পৃক্ততা ছিলেন ।
গ্রামের জনাব হাজী মারজেল হোসেন, হেলাল উদ্দিন , আব্দুল গনি মাস্টার , মরহুম ইউসুফ আলী মন্ডল ওরফে ইউসুফ মেম্বর, আবুল হোসেন মাস্টার, মরহুম জনাব রমজান আলী ডিলার সহ গ্রামের আরো কিছু গুণী ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন , গ্রামের উন্নয়নের জন্য দলমতের উধ্বে থেকে গ্রামের উন্নয়নমূলক সকল কাজের ভিত্তি গড়ে দিয়ে গিয়েছেন এই ক্ষনজন্মা এই নক্ষত্রটি । উনি সরকারের কোন প্রতিনিধি না হয়েও সাধারণ নাগরিক হয়েও গ্রামে বিদ্যুৎ আনার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন এবং উনি বেঁচে থাকতেই বিদ্যুৎ গ্রামে এসেছে ।
ক্ষনজন্মা এই মহান মানুষটি ১৯৯৩ সালের ২৬শে ডিসেম্বর মাত্র ৪৯ বছর বয়সে মহান আল্লাহতালার ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার সকল মায়া ত্যাগ করে চলে যান স্থায়ী ঠিকানায়। তিনি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু রেখে গেছেন কিছু স্মৃতি ও তার আদর্শ সেগুলো এলাকাবাসী সারাজীবন মনে রাখবেন ।
তার ছেলে মেয়েরাও বাবাব আদর্শে মানুষ হয়েছেন এবং বর্তমানে সেই গ্রামেই আন্তজাতিক মান সম্পূর্ণ গ্রামীণ উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সাথে কাজ করে যাচ্ছেন এলাকার জনগণের সেবা ও উন্নয়নের জন্য ।
গ্রামীণ উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আমেরিকান প্রবাসী মোঃ আসাদুজ্জামান খুব ছোট কাল থেকেই উনাকে আইকন হিসেবে ভাবতেন । তার সৎ নিষ্ঠার আদর্শের একজন ভক্ত হয়ে উনার ভবিষ্যত উন্নযনমূলক কাজের চিন্তাভাবনাটাকে সামনে রেখে উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ও প্রবাসের অনেক সামাজিক সংগঠনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা নিয়ে গ্রামের প্রবাসী , চাকরীজীবি ও স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে গ্রামীণ উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি গঠন করেছেন । গ্রামের সবার আশা আকাঙ্ক্ষা এই সংগঠনটি মরহুম তোফাজ্জেল হোসেন সহ গ্রামের উন্নয়ন নিয়ে যারা ভাবতেন এবং এখনো ভাবেন তাদের স্বপ্নগুলো পূরন করতে যথেস্ট ভূমিকা রাখবে ।
মরহুম তোফাজ্জেল হোসেনের মত আদর্শবান মানুষ এখন আর সমাজে দেখা যায়না , যারা তাকে ব্যক্তিগত ভাবে পাশে থেকে দেখেছেন তাদের উচিত বর্তমান এই সমাজে তার কর্মকান্ড , আদর্শ ও নীতিকে সামনের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা , তাহলে আমরা একটা সুন্দর মডেল গ্রাম পাবো , যেখানে থাকবেনা কোন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা , থাকবেনা কোন ভেদাভেদ ।
Posted ১:১৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
protidinerkushtia.com | editor