বুধবার | ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



সত্যের পথে অবিচল | ২৪ ঘণ্টা বাংলা সংবাদ

গাংনীতে অতিবর্ষনে পাট চাষীরা বিপাকে, ব্যাপক লোকসানের আশংকা

গাংনীতে অতিবর্ষনে পাট চাষীরা বিপাকে, ব্যাপক লোকসানের আশংকা

গাংনীতে পাট চাষীরা বিপাকে পড়েছে।আশা করেছিলেন, চলতি বছর সব গতবছরের সব লোকসান পুষিয়ে উঠবেন। কিন্ত তা আর হলোনা। বর্তমান বাজারে পাট কেনার ক্রেতা নেই, বর্তমানে যে পাটের বাজার মূল্য ১ হাজার ৬শ’ টাকা মণ এখন তা বেচতে হচ্ছে ১ হাজার ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা দরে।পাট বিক্রি করে যা পাবেন, তা বর্গাচাষীদের ব্যাংকের দেনা মেটাতেই শেষ হয়ে যাবে ,মূলধন থাকবে না।


গত বছর ধান চাষ করে চাষীরা লাভবান না হওয়ায় এবার লাভের আশায় চাষীরা পাট চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিগত বছরে পাট চাষ কম হলেও এ বছর গাংনী উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার সকল উর্বর জমিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাট খুব ভাল হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত পাট যখন প্রথম নিড়ানী শেষে বৈরী আবহাওয়া অর্থ্যাৎ অতি বর্ষণে পাটের বর্ধন ব্যাহত হয়। প্রায় প্রতিদিন প্রবল বর্ষণে পাটের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।এবং পর্যায়ক্রমে প্রায সব জমিতেই হাটু পানি থেকে বুক পানিতে পাট ক্ষেত প্লাবিত হয়।
ফলে পাটের বর্ধন কমে যায় এবং গোঁড়ায় শেঁকড় হয়ে যায়।

পাট চাষীরা উপায়ান্তর না দেখে পানির মধ্যে অধিক খরচে লেবার লাগিয়ে পাট কেটে জমিতেই জাগ দেয়।পাট চাষী উপজেলার কাথূলী গ্রামের আমারুল জানায়, পাট এবছর লম্বা না হওয়ায় বিঘা প্রতি ফলন মাত্র ৬ থেকে ৭ মন। বর্তমান বাজার মূল্য ১ হাজার সাড়ে ৩শ’ টাকা।একবিঘা জমিতে পাট চাষ করতে সর্ব সাকুল্যে খরচ হয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা।


জমি চাষ থেকে শুরু করে সার, লেবার খরচ, গাড়ি ভাড়া, পানিতে জাগ দেয়া, পাট শুকানো, বাজার জাতকরণ ইত্যাদি মিলিয়ে খরচ হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। অর্থ্যাৎ কিছুই চাষীদের থাকছে না। চাষীরা তাদের উৎপাদিত পাট দাম না থাকায় কিছুটা ভিজা রেখে বিক্রি কার চেষ্টা করছে।এসব কারনে পাট ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্যে পাট ক্রয় করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
জোড়পুকুরিয়া গ্রামের নাসিরউদ্দীনসহ চেংগাড়া, ভোমরদহ, ধর্মচাকী ,ভাটপাড়া, নওয়াপাড়া, হিজলবাড়ীয়া, হিন্দা, হাড়াভাঙ্গা, বালিয়াঘাট বেতবাড়ীয়া গ্রামের পাট চাষীরা একই কথা জানালেন।
চাষিরা জানান, বিদ্যুৎ, ডিজেল ও সারের দাম বাড়ায় অনেক কৃষকই বোরো ধান চাষ না করে তুলনামূলক সাশ্রয়ী পাট চাষের দিকে ঝুঁকে ছিলেন।কিন্ত, পাটের বাজার খারাপ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। এসব কৃষক জানান, চাষে খরচ কম হলেও পাট কাটা, আঁশ পচানো এবং রোদে শুকানো পর্যন্ত অনেক পরিশ্রম। তা ছাড়া এখানে কাজ করা একজন দিনমজুরকে প্রতিদিন ৪শ’ টাকা করে মজুরি দিতে হয়।এত খরচের পর এই বাজারমূল্য মেনে নেওয়া যায় না বলে জানান তাঁরা।

এব্যপারে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কে এম শাহাবউদ্দীন আহমেদ জানান, এবছর গত বারের তুলনায় বেশী পাট চাষ হয়েছে।এবছর ৯ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছ্।েএবছর অতি বর্ষণের কারণে পাট লম্বা হতে পারেনি।


অনেক চাষী তাদেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম পাট কাটার সিদ্ধান্ত নিলেও অতি বর্ষণে ধান চাষ করতেও পারেনি।কারন পাটের অনেক জমিতে কোমর বা পানি গলা পানি।পাটের বর্ধন না হওয়ায় বিঘাপ্রতি ফলন কম হয়েছে।সে জন্য চাষীরা লাভবান হতে পারছেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে কিছুই করার থাকেনা।

Facebook Comments Box

Posted ২:৪১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই ২০২০

protidinerkushtia.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

মোঃ শামীম আসরাফ, সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :

ঝাউদিয়া বাবলু বাজার, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ফোনঃ +৮৮ ০১৭৬৩-৮৪৩৫৮৮ ই-মেইল: protidinarkushtia@gmail.com

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
error: Content is protected !!