নিজের কৃতকর্ম ঢাকতে এবং অহেতুক হয়রানী করতে কুষ্টিয়া ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (KIST) এর ৬জন সম্মানিত সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদ ও ধর্ষন চেষ্টার মামলা করেছে প্রতিষ্ঠানটিতে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর( ইলেকট্রিক্যাল) পদে কর্মরত রাশনা শারমিন নামে এক নারী।
ঐ শিক্ষিকা ৬জন সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকা কে আসামী করে গত ২৪ আগষ্ট কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন যার মামলা নং- ৩১। মামলার এজাহারে তিনি দাবি করেন, কুষ্টিয়া ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি(KIST) এর ৬জন সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকা তাকে যৌন হয়রানী করেছে এবং রাষ্ট্রবিরোধী জঙ্গীবাদ কর্মকান্ডে অংশ নিতে চাপ প্রয়োগ করেছে।
ঐ শিক্ষিকার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে থলের বিড়াল। রাশনা শারমিন এক সময় কুষ্টিয়াতেই অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন। সেখানে বিভিন্ন অনিয়মে তাকে এবং তার এক সহযোগি শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এরপর তিনি কুষ্টিয়া ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজিতে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল) পদে শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানের নিয়ম কানুনকে নিজের মত করে পরিচালিত করার চেষ্টা করতে থাকেন। রাশনা শারমিন কলেজের কাউকে কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে, নিয়মনীতির সবকিছু তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন।
এর ধারাবাহিকতায় কলেজের সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তাগন এ ব্যাপারে তাকে শোধরানোর চেষ্টা করলে উল্টো সে প্রধান কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট বিভিন্ন অভিযোগ পাঠান। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয় থেকে রাশনা শারমিনকে দুই মাসের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই মাসের ১৮ তারিখে বাধ্যতামুলক দুই মাসের জন্য তাকে ছুটিতে পাঠানোর চিঠি দেয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়। এরপরই মূলত তিনি ঐ কলেজের সম্মানিত সিনিয়র ৬ শিক্ষক -শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টার মামলার নাটক সাজান। ঐ প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক ইসলামী শরিয়া মোতাবেক জীবন যাপন করলে রাশনা থানায় দায়েরকৃত অভিযাগে তাদের জঙ্গী বলে আক্ষ্যা দেন এবং প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপালসহ দুই নারী ও তিন শিক্ষক মিলে তাকে ধর্ষন চেষ্টা করেছেন এবং তা মোবাইল ফোনে ধারন করেছেন বলেও অভিযোগ করেন।
একজন নারীকে ৬ জন মিলে ধর্ষন চেষ্টা করলো আর তিনি এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলেন বিষয়টি হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না বলে মনে করছেন কুষ্টিয়ার সচেতন মানুষ।কুষ্টিয়া ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (KIST) প্রতিষ্টানটি কুষ্টিয়া শহরের প্রানকেন্দ্র ইব্রাহিম প্লাজায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসলেও এই প্রতিষ্ঠান বা এখানে কর্মরত কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কোন অভিযোগ উঠেনি।
এই প্রতিষ্ঠানটির মালিক টাঙ্গাইল-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য। প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে কারো সাথে কথা বলা সম্ভব না হলেও এইখানে কর্মরত একজন জানান, প্রতিষ্টানের আভ্যন্তরিন সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষান্তে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্নরূপে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও অসৎ উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তিনি যে অভিযোগটি করেছেন তার কোন সত্যতা তিনি কখনই দেখাতে পারবেন না। প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনকে সব ধরনের তথ্য এবং রাশনা শারমিন এই প্রতিষ্ঠানে কি করেছে তার সবকিছুর প্রমাণপত্র দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আশা করি, আমরা খুব শীগ্রই এই অভিযোগ যে মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন তা প্রমানিত করতে সক্ষম হবো।
এই বিষয়ে মামলার বাদী রাশনা শারমিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও থানায় দায়েরকৃত এজাহারে তিনি যে মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করেছেন সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদকের কাছে নাম না প্রকাশের শর্তে একটি সূত্র দাবি করছে, অবিবাহিতা এই নারী রাশনা শারমিন ব্যক্তিজীবনে বেপোরোয়া জীবনযাপন করতেন। সামান্য কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহন করলেও তার জীবনযাপন ছিলো উচ্চবিলাসী। এই প্রতিবেদকের কাছে আসা তথ্যমতে রাশনার সাথে চাকুরী করতেন তার সাবেক এক কলিগ বিভিন্নভাবে এই মিথ্যাচার করছেন। রাশনা শারমিনকে নিয়ে আরো কিছু অভিযোগ উঠেছে যেগুলো আগামী পর্বে তুলে ধরা হবে।
Posted ৫:২৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০
protidinerkushtia.com | editor