শোভন আহাম্মেদ, ভেড়ামারা প্রতিনিধি।
নভেল করোনা ভাইরাসের করাল থাবায় বিশ্ব আজ থমকে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে অচল করে দিয়েছে। প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ তাড়া করে ফিরছে মানুষকে। বিশ্বে এ ভাইরাসের আক্রমণে মহামূল্যবান প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৯ লক্ষাধিক মানুষ এবং এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৫৪ লক্ষ। যার ছোবল থেকে রেহাই পাইনি বাংলাদেশও।
বাংলাদেশের মধ্যে ছোট্র একটি উপজেলা ভেড়ামারা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেশের ন্যায় ভেড়ামারাতেও আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে এক সময়। ভেড়ামারাকে রেড জোনের আওতাধীন করা হয়। লকডাউন করা হয় উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। অসহায় হয়ে পড়ে ভেড়ামারাবাসী।
সেই ভেড়ামারাবাসীকে ভালো রাখার জন্য, করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে রক্ষার জন্য অভিভাবকের ভূমিকায় পাশে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ভেড়ামারার উপজেলা নির্বাহি অফিসার সোহেল মারুফ। ভেড়ামারাবাসীকে ভালো রাখার জন্য এমন কিছু নেই যা সাধ্যের মধ্যে তিনি করেননি। যার বর্ণনা এ ক্ষুদ্র পরিসরে দেয়া সম্ভব নয়।
তিনি ভেড়ামারার শুধু একজন সরকারি দায়িত্বশীল অফিসার ছাড়া কেউ নন। কিন্ত তিনি এখন ভেড়ামারাবাসীর আত্মার আত্মীয়। পরম আত্মীয়। হৃদয়ের গহীনে গেঁথে রাখবে তাঁর নাম। সুখে-দুঃখে তাঁর কাছেই ছুটে আসে অসহায়, নিরন্ন, সুবিধাবঞ্চিত থেকে শুর করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।
করোনা ভাইরাসের প্রভাব রোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত এ উপজেলায় প্রদত্ব রাষ্ট্রীয় সকল কার্যক্রম যেমন, হাজার হাজার অসহায় মানুষকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ব ত্রাণ তহবিলের চাউল ও খাদ্যসামগ্রি এবং ২৫০০/-করে মোবাইলের মাধ্যমে টাকা সহ এই ভেড়ামারা উপজেলায় প্রায় সরকারি-বেসরকারি ভাবে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছেন।
বাংলাদেশের মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম ভেড়ামারা বাজারকে স্থানান্তর করেন ভেড়ামারা কলেজ মাঠে। কাঁচা বাজার বসানোর ব্যবস্থা করে দূরত্ব নিশ্চিত করেছেন। ২মাস ব্যাপী মূল্য ছাড়ের দোকান বসানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। করোনা আক্রান্তে মারা যাওয়া ৭জনের মধ্যে ১জন হিন্দু সম্প্রদায়ের রোগী ছিলেন। তিনি নিজ দায়িত্বে দাফন সম্পন্ন করেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের রোগী মারা যাওয়া ব্যক্তিকে সশানে নিয়ে সৎকার করেন। এছাড়া ২৫০০টাকা করে ৩৫০জন পরিবহণ শ্রমিককে সহায়তা করেছেন। জনগণের কাছে সুচারু রুপে বন্টনে তিনি একজন প্রথম সারির করোনা যোদ্ধার সিপাহসালার হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভেড়ামারাকে রেড জোন থেকে গ্রীণ জোনে পরিণত করার মহানায়ক হিসেবে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। ভেড়ামারাকে গ্রীণ জোনের সেই ধারাহিকতাকে রক্ষা করার জন্য তিনি এখনও কাজ করে চলেছেন। করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য সরকার মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করেছে এবং সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সেই নির্দেশনা পরিপালনের জন্য এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ও নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল মারুফ থানা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা, বাজার মনিটরিং ও জনসচেতনতায় মাঠে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষেত্র বিশেষে আইন অমান্যকারীদের আর্থিক দ- প্রদান করে শাস্তির ব্যবস্থা করছেন। আবার একই সময় শিশু ও সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন তিনি।
উদ্দেশ্য একটাই কিছু দুষ্টের দমন করে হলেও ভালো থাকুক ভেড়ামারাবাসী। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বাইরে বের হলে সকলের জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক এ বিষয়ে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। জরিমানা আদায় উদ্দেশ্য নয়। সকলকে সচেতন করা এবং সকলকে নিয়ে ভালো থাকায় একমাত্র উদ্দেশ্য।
সকলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন, সুস্থ্য থাকুন। এছাড়াও আরো বলেন, সরকারি নির্দেশনা মানাতে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমান আদালত চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগী সংখ্যা প্রায় ১৯৬ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১৫৯ জন। এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ৬ জন।
Posted ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০
protidinerkushtia.com | editor