রাজু আহাম্মেদ, দৌলতপুর প্রতিনিধি
বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা, কর্মচারীবৃন্দ এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়।
আজ ১৫ আগস্ট, ২০২১ রোজ রবিবার, কুষ্টিয়া, দৌলতপুর উপজেলার বড়গাংদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে।
বড়গাংদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসটি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করা হয়।
অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাঃ মহররম হোসেন ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ এর ঘোর অমানিশাময় নির্মম ঘটনার তাৎপর্য আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ১৫ ই আগস্ট ১৯৭৫ ঘাতকের নির্মম বুলেটে সপরিবারে নিহত হন বাঙালি জাতির মহামানব, বাংলার অবিসংবাদিত মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়ি রক্ষীরা বেল বাজিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শুরু করা মাত্রই বাড়িটি লক্ষ্য করে দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু বিষয়টি আঁচ করতে পেরে দোতালায় তার ঘরের দরজা বন্ধ করে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেন।
গোলাগুলি থামলে বঙ্গবন্ধু দরজা খুলে বারান্দায় বেরিয়ে আসলেই সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী অফিসার তাকে ঘিরে ধরে। মেজর মহিউদ্দিন ও তার সাথের সৈন্যরা বঙ্গবন্ধুকে নিচে নিয়ে যেতে থাকে।
ঘাতকদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, তোরা কি চাস? কোথায় নিয়ে যাবি আমাকে? বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের কাছে মহিউদ্দিন ঘাবড়ে যাই।বঙ্গবন্ধু বলেন, তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাবি, কি করবি- বেয়াদবি করছিস কেন?’ এ সময় নিচতলা ও দোতালার সিঁড়ির মাঝামাঝিতে অবস্থান নেয় বজলুল হুদা ও নূর চৌধুরী।বঙ্গবন্ধু কে নিচে নিয়ে আসার সময় নুর কিছু একটা বললে মহিউদ্দিন সরে দাঁড়াই। সঙ্গে সঙ্গে বজলুল হুদা ও নূর চৌধুরী তাদের স্টেনগান দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে গুলি করে। বঙ্গবন্ধুর বুকে ও পেটে ১৮ টি গুলি লাগে। নিথর দেহটা সিঁড়ির উপর পড়ে থাকে সারা সিঁড়ি ভেসে যায় রক্তে।
আলোচনায় তিনি ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের পরিচয় উল্লেখ করে বলেন এই দিনে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও আরও যারা নিহত হয়েছিলেন -বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী মহীয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধু তিন পুত্র সন্তান – শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং ১০ বছরের শিশু পুত্র শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল খুকু ও পারভেজ জামাল রোজী। বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের। বঙ্গবন্ধু সেজ বোনের স্বামী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। বঙ্গবন্ধুর সেজ বোন এর বড় ছেলে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মনি। আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মেয়ে ও ছেলে বেবী সেরনিয়াবাত ও আরিফ সেরনিয়াবাত। আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের নাতি সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু। আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত। আমির হোসেন আমুর খালাতো ভাই আবদুল নঈম খান রিন্টু। বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য দেন সহকারী প্রধান শিক্ষক , সিনিয়র শিক্ষক, ও সহকারী শিক্ষক বৃন্দ।
বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়। বঙ্গবন্ধুর ৪৬ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
Posted ৬:১১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৫ আগস্ট ২০২১
protidinerkushtia.com | editor