শনিবার | ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



সত্যের পথে অবিচল | ২৪ ঘণ্টা বাংলা সংবাদ

বাসভর্তি যাত্রী চান মালিকেরা, আগের ভাড়ায় ফেরার আশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাসভর্তি যাত্রী চান মালিকেরা, আগের ভাড়ায় ফেরার আশ্বাস

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নানা সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ


করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নানা সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করে গণপরিবহন চলার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু এখন তার অনেকটাই মানছে না বাস কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীরা। গাদাগাদি করে বাসে উঠছেন যাত্রীরা।
করোনার মধ্যেই আসন পূর্ণ করে বাস চালাতে চান মালিকেরা। করোনা পরিস্থিতিতে নির্ধারণ করা বাড়তি ভাড়াও বাদ দিয়ে আগের ভাড়ায় ফিরতে চান তাঁরা। মালিকদের ভাষ্য, সড়কে অন্য পরিবহনের চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাসের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চালানোর কোনো অর্থ হয় না।

গত রোববার প্রথমে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়ে চিঠি দেয় পরিবহনমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বনানীর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও একই প্রস্তাব দিয়েছেন পরিবহনমালিকেরা। তাঁদের সঙ্গে পরিবহনশ্রমিক নেতারাও একমত প্রকাশ করেছেন।

রোববার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে সই করেন সংগঠনের মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যা। চিঠিতে বলা হয়, মাইক্রোবাস, অটো টেম্পো, লঞ্চ-স্টিমারে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে যত আসন তত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এ ছাড়া মহানগরগুলোতে সিটিং সার্ভিসে এবং আন্তজেলা পথে লোকাল বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করছে বলে অভিযোগ এসেছে। এই অনিয়ম দিন দিন বাড়ছে। করোনার আগের মতো যত আসন তত যাত্রী পরিবহনের সুযোগ দেওয়া হলে বাড়তি ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায় করা হবে না।


গতকালের বৈঠক শেষে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, পরিবহনমালিকদের প্রস্তাবটি প্রথমে তাঁরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। সেখান থেকে মন্ত্রিপরিষদে যাবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেই আসবে।

করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি, এ অবস্থায় আসন পূর্ণ করে গণপরিবহন চালানো কতটা যৌক্তিক হবে—জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, তিনি মনে করেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই ভালো। এরপরও সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে।


বৈঠকে বিআরটিএর কর্মকর্তা ও মালিক-শ্রমিক নেতারা ছাড়াও পুলিশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হন। তিনি বলেন, করোনাকালে গণপরিবহনের বিষয়ে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সবই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ অনুসারে নেওয়া হয়েছে। আর নির্দেশনা এসেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে। ফলে সবকিছু স্বাভাবিক করতে হলে মন্ত্রিপরিষদ ও বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত লাগবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআরটিএর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ নির্দেশনা অনুসারে, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিধিনিষেধ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বলবৎ আছে। এর আগে গণপরিবহন আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। ১ সেপ্টেম্বর থেকে হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, পরিবহন-মালিক শ্রমিক এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে হয়তো আরেকটি বৈঠক করা লাগতে পারে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৬ মার্চ গণপরিবহন বন্ধ করা হয়। ১ জুন থেকে ১১ শর্তে সীমিত পরিসরে বাস চালু হয়। এর মধ্যে মূল বিষয় ছিল প্রতিটি বাসে অর্ধেক আসন খালি রাখতে হবে। এর জন্য ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ায় সরকার। করোনাকালীন এই বাড়তি ভাড়া প্রযোজ্য বলে জানানো হয়। তবে গত পবিত্র ঈদুল আজহায় দূরপাল্লার পথে এবং ঈদের পর রাজধানীর গণপরিবহনে বর্ধিত ভাড়ায় বাড়তি যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, যাত্রী অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি করে আসছে।

৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির সময় এর বিরোধিতা করেছিল যাত্রী অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠনগুলো। তাদের আশঙ্কা ছিল, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভাড়া আর আগের জায়গায় ফিরে যাবে না।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আশ্বাসে বিশ্বাস করে সরকারকে বসে থাকলে হবে না। দেখা যাবে তাঁরা কাগজে-কলমে আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেবেন, কিন্তু বাস্তবে হবে না। কারণ, এটা শুধু রাজধানীর ব্যাপার না। প্রতিটি উপজেলা-জেলায় ভাড়া বেড়েছে। এমনকি বাসের সঙ্গে অটোরিকশা, রিকশার ভাড়াও বেড়ে গেছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় কমিটি করে তদারক করতে হবে। নতুবা জনগণকে কড়া মাশুল দিতে হতে পারে।

Facebook Comments Box

Posted ৬:৩৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৯ আগস্ট ২০২০

protidinerkushtia.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

মোঃ শামীম আসরাফ, সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :

ঝাউদিয়া বাবলু বাজার, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ফোনঃ +৮৮ ০১৭৬৩-৮৪৩৫৮৮ ই-মেইল: protidinarkushtia@gmail.com

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
error: Content is protected !!