প্রতিদিনের কুষ্টিয়া, প্রতিনিধি
বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুর্নীতির খবর প্রকাশের পরেও এখনো বহাল শিশির বাবু
বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুর্নীতির খবর প্রকাশের পরেও এখনো কর্মস্থলে বহাল রয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী শিশির চক্রবর্তী। গণমাধ্যমে দুর্নীতির খবর প্রকাশের পরেও এখনো কর্মস্থলে বহাল থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই উপজেলার সাধারন মানুষ। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে একই কর্মস্থলে থাকায় ঘুরেছে তার ভাগ্যের চাকাও । বিভিন্ন কায়দায় সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম-দুর্নীতি করে কোটিপতি বনে গেছেন তিনি। বিভিন্ন কাজের ভুয়া বিল তৈরি, সরকারী উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের ফাইল হস্তগত করে অর্থ আদায়, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়কে নিজ কব্জায় রেখেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুর উপজেলাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে কেউ যোগদান করলেই তাকে ভূল-ভাল বুঝিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন এই শিশির। সরকারী হাট বাজারের হিসাবে নয় ছয় কারার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ভ্রাম্যমান আদালতের ভয় দেখিয়ে ও তাদের জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন তিনি। জাতীয় দিবস, বার্ষিক নানা অনুষ্ঠান, ধর্মীয় উৎসবসহ বিভিন্ন ধরনের কাজের নামে ভুয়া বিল ভাউচারে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন তিনি।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কুষ্টিয়া শহরে পৌরসভার হাউজিং এলাকায় ও বড় বাজার হিন্দুপটিতে কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রয় করেছেন, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় বানিয়েছেন বিলাসবহুল বাড়ী? শিশির বাবু অফিস সহকারী পদে চাকুরী করে কোটি টাকার সম্পদ কিভাবে করলেন এমন প্রশ্ন এখন জনমনে। এছাড়াও ভারতে তার কাকা থাকার সুবাদে সেখানেও শিশির বাবু সেখানে বিপুল পরিমঅন সম্পদ বিনিয়োগ করেছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অনেকের কাছে শিশির বাবু ছোট সাহেব বা ছোট ইউএনও বলে পরিচিত। চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী শিশির চক্রবর্তী কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার সহকর্মীরা বলছেন বিভিন্ন বিল ভাউচারে অধিক বিল তৈরি, প্রসাশনের অভিযানের খবর লিক করে টাকা নেওয়া, সরকারী বিশেষ অনষ্ঠানের দিনে ১৪ ইউনিয়নের বিভিন্ন ব্যবসায়ী, ভাটা মালিক, সার ডিলার, পদ্মা নদীর বালু দস্যুদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করে থাকেন। উপজেলা বাজারের দোকান মালিকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে শিশির বাবু অফিসের বিভিন্ন কাগজপত্র ফটোকপি ও প্রয়োজনীয় পন্য ক্রয় করে দোকান থেকে ফাকা ভাউচার নিয়ে যান এবং নিজের মতো করে টাকার পরিমান বসিয়ে নেন তিনি। অফিস থেকে বিল তুলে নিলেও দোকানে বাকির টাকা পরিশোধ করেননি দীর্ঘ দিন ধরে। পরিষদের সরকারী কাজের বিল ভাউচারে নয় ছয় করে তিনি এখন কোটিপতি বনে গেছেন।
দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে একটি অসাধু সিন্ডিকেট তৈরি করে শিশির একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন। অফিসের পিওন থেকে শুরু করে সকলকে অর্থের বিনিময়ে বা বিভিন্ন কৌশলে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন শিশির বাবু। কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর যাতে প্রকাশ না হয়, সে দিকেও খেয়াল আছে তার। একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে শিশির বাবু কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন, তা রহস্যজনক। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও দুদকের নজরে এনে অনুসন্ধানে নামলে আসল রহস্য উন্মোচিত হবে এমন মন্তব্য ভূক্তভোগী ও সংশিলষ্টদের।
Posted ১২:৪২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩
protidinerkushtia.com | editor