শামীম আশরাফ
ভোট কারচুপির অভিযোগে প্রার্থী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৫ম ধাপের ইউপি নির্বাচনে সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী কারচুপির অভিযোগে নৌকা প্রতীকে জয়ী প্রার্থী শাহাব উদ্দিন মাদবরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন প্রতিপক্ষ প্রার্থী রাজু আহমেদ। এ মামলায় বিবাদী হিসেবে শাহাব উদ্দিনের সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সাভার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে আসামী করা হয়েছে। এ মামলায় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে সাভার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাই আশুলিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন। মঙ্গলবার(০৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আশুলিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে এ মামলার বিষয়ে জানিয়েছেন রাজু আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গত নির্বাচনে আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দীতা করা রাজু আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, গত ৫ জানুয়ারি আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছি। আমার প্রতিদ্বন্ধি ৪ জন প্রার্থী থাকলেও তথাকথিত বর্তমানে অবৈধভাবে বিজয়ী ঘোষিত প্রার্থী মোঃ শাহাব উদ্দিন মাদবর সরকার দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। এই প্রার্থী নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর থেকেই নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। আমি নিয়ম মাফিক সে সকল অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ যথাক্রমে কর্তৃপক্ষের নিকট করেছি। কিন্তু উক্ত শাহাব উদ্দিন মাদবর বর্তমান সরকার দলীয় প্রার্থী হওয়ায় আমার সে সকল অভিযোগের কোন প্রতিকার পাইনি।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ নির্বাচনের দিন শাহাবউদ্দিন মাদবর ২০০/২৫০ জন স্বসস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে কেন্দ্রে মহড়া দিয়ে আতংক সৃষ্টি করে আমার এজেন্টদের কে ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে জাল ভোট দিতে থাকে। তারা মৃত ব্যক্তির নামের ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে দেয়। আমি তৎক্ষনাত দায়িত্ব পাপ্ত কর্মকর্তাদের নিকট লিখিতক অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। নির্বাচন কমিশনের সকল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আমার প্রতিদন্ধী প্রার্থী শাহাবুদ্দিন মানবর কে বিজয়ী ঘোষনা করেছেন। এবং ২৫/০১/২০২২ ইং তারিখে গেজেট প্রকাশ করেছেন। আমি কোন পর্যায়েই প্রতিকার না পেয়ে বিজ্ঞ ১ম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেছি। যার নির্বাচনী ট্রাইবুনাল মোকাদ্দমা নম্বর ০২/২০২২। উক্ত মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, সারাদেশে সুষ্ঠু ভাবে ইউপি নির্বাচন হলেও আশুলিয়াকে কলঙ্কিত করেছেন শাহাব উদ্দিন মাদবর। সরকারের সুনামকে খুন্ন করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। সঠিক তদন্ত শেষে যেই রায়-ই আসুক আমি মাথা পেতে নেব। আমার কাছে নির্বাচনে কারচুপির প্রচুর প্রমাণ রয়েছে। আমি সেগুলো সবাইকে জানিয়েছি তাও কোন প্রতিকার পাইনি।
মামলা পরিচালনাকারী ঢাকা জেলা জজ কোর্টের এডভোকেট মোঃ শাহ আলম চৌধুরী (সম্রাট) বলেন, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন-২০২১ এর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ রাজু আহম্মেদ নির্বাচনের পর গত ২৫-০১-২০২২ ইং তারিখে প্রকাশিত গেজেট বাতিল ঘোষণা চেয়ে ও আশুলিয়া ইউনিয়নে পুনঃ নির্বাচন এর দাবি করে ঢাকা জেলার,১ম সিনিয়র সহকারী জজ (নির্বাচনী ট্রাইবুনাল),এর আদালতে ঘোষণামূলক মোকদ্দমাটি দায়ের করেছেন।যাহার নং- নির্বাচনী মোকদ্দমা- ০২/২০২২।তাছাড়া গত ০৭-০২-২০২২ ইং তারিখে ঢাকা জেলার ১ম সিনিয়র সহকারী জজ (নির্বাচনী ট্রাইবুনাল), ঢাকা এর বিচারক জনাবা কানিজ তানিয়া রুপা উক্ত মোকদ্দমাটি আমলে গ্রহণ করেছেন এবং মোকদ্দমার বিবাদী গণের প্রতি সমন জারীর আদেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত গত ৫ জানুয়ারি এই ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১৮ হাজার ৪৬১ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন শাহাব উদ্দিন মাদবর ও আনারস প্রতীকের রাজু আহমেদ পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৮৫৪ ভোট।
Posted ১২:২৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
protidinerkushtia.com | editor