বৃহস্পতিবার | ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



সত্যের পথে অবিচল | ২৪ ঘণ্টা বাংলা সংবাদ

লোকসান গুনতে হচ্ছে দিনাজপুরের লিচু চাষিদের

 মোসলেম উদ্দিন, হিলি দিনাজপুর প্রতিনিধি

লোকসান গুনতে হচ্ছে দিনাজপুরের লিচু চাষিদের
বাজারে উঠতে শুরু করেছে দিনাজপুরে সুস্বাদু ও রসালো বিভিন্ন জাতের লিচু। গেলো বারের মতো ভাল ফলন না হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে লিচু চাষিদের। আবার বেশি দামে লিচু ক্রয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এবার লিচুর ফলন কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় লিচু বাগানগুলোতে তেমন ধরেনি লিচু। গত বছরে যে সব বাগানে লিচুতে গাছ নুয়ে পড়ে ছিলো, সে সব বাগানে প্রায় অর্ধেক লিচু গাছে ঝুলছে।
আবার অনেক গাছে একটিও লিচু আসেনি। বাগান ছাড়াও অনেকের বসত ভিটাতেও তেমন নেই লিচু। যে সকল লিচুর বাগান মালিক প্রতি বছর তাদের বাগান থেকে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতো, এবছর অনেকেই ৫০ হাজার টাকার লিচু পাবে। এদিকে হিলি বন্দরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, লিচু কিনার হিড়িক পড়েছে লিচু ব্যবসায়ীদের নিকটে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার লিচুর দাম অনেক বেশি। দাম বেশি হলেও চাহিদা অনুযায়ী লিচু পাচ্ছেন না ক্রেতারা। বাজারে উঠেছে মাদ্রাজি, চাইনা থ্রী লিচু, তবে বোম্বে লিচু আরও সপ্তাহখানিক পর উঠবে।
চাইনাথ্রী লিচু ৫ হাজার টাকা দরে ক্রয় করে ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করছেন ৬ হাজার টাকা হাজার অর্থাৎ ৬০০ টাকা ১০০টি লিচুর দাম। মাদ্রাজি লিচু ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে কিনে তা বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ১০০টা। লিচু কিনতে আসা রেজাউল করিম বলেন, মৌসুমি ফল কিনতে হবে। বাড়িতে মা-বাবা বাচ্চারা খাবে, তবে গত বারের চেয়ে এবার দাম অনেক বেশি। গেলো বার যে লিচু ৮০ টাকা থেকে ১০০ টা শও কিনে ছিলাম, আজ তা কিনতে হলো ১৬০ টাকা দরে। আর একজন ক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, চাইনাথ্রী ১০০ লিচু নিলাম ৬০০ টাকা করে। গতবার এলিচু নিয়ে ছিলাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। দাম বেশি হলেও সুবিধাজনক নই।
হিলি চারমাথায় একজন লিচু ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিরামপুর, নবাবগঞ্জে লিচুর দাম বেশি, তাই আমরা দিনাজপুর সদরে মাসুমপুর বাজার থেকে লিচু কিনে আনছি। সেখানে একটু দাম কম। মাদ্রাজি লিচু ১২০ টাকা শও কিনে তা ১৬০ থেকে ১৮০ দরে বিক্রি করছি। কথা হয় হিলি বাজারের লিচু ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়ার সাথে, তিনি বলেন, চাইনাথ্রী লিচু ৬০০ টাকা শও বিক্রি করছি, এটা কিনা আছে ৫০০ টাকা শও। এই লিচুর চাহিদা বেশি, তবে দাম বেশির কারণে অল্প করে মানুষ কিনছেন। একজন লিচু গাছয়ালা রমিজ উদ্দিন বলেন, আমার বাড়িতে একটা বোম্বে জাতের লিচু গাছ আছে। প্রতি বছর কয়েক হাজার লিচু ধরে, এই বার একটিও লিচু আসেনি। নবাবগঞ্জের লিচু বাগান চাষি হাসেম উদ্দিন বলেন, আমার ছোট-বড় ৫ টি লিচু বাগান আছে।
প্রতি বছর প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করি। কিন্তু এবছর মনে হয় না ৫০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবো? এই বছরটাই মাটি। নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আবহাওয়ার কারণে এবার উপজেলার লিচু চাষিরা আশানুরূপ তেমন লিচুর ফলন পাইনি লিচু চাষিরা। উপজেলায় মোট ২৭৫ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিক্সন চন্দ্র সরকার জানান, উপজেলায় মোট ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করেছেন লিচু চাষিরা। গত বর্ষায় টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে প্রতিটি লিচু গাছের গোড়ায় পানি জমে ছিলো। আর এই কারণে লিচুর মুকুল আসার সময় গাছগুলোতে মুকুল না এসে নতুন পাতা বেড় হয়ে ছিলো। মুলত আবহাওয়ার কারণেই চলতি মৌসুমে লিচুর ফলন কম।
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদ ইকবাল জানান, লিচুর চলতি মৌসুমে জেলার ১৩ টি উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। গত বারের চেয়ে এবার লিচুর ফলন অনেকটাই কম।
Facebook Comments Box


Posted ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১

protidinerkushtia.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

মোঃ শামীম আসরাফ, সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :

ঝাউদিয়া বাবলু বাজার, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ফোনঃ +৮৮ ০১৭৬৩-৮৪৩৫৮৮ ই-মেইল: protidinarkushtia@gmail.com

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকৃত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
error: Content is protected !!