খলিসাকুন্ডিতে সংবাদ সম্মেলণে বিচারের দাবী ভুক্তভোগির ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ৯ম শ্রেণির এক স্কুল শিক্ষার্থীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অপহরণের পরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানা পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন বলে দাবী ঐ শিক্ষার্থীর পিতার। এ ঘটনায় ঐ স্কুল শিক্ষার্থীর পিতা কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে আরেকটি এজাহার দিয়েছেন দৌলতপুর থানা পুলিশ। তবে বাদীর দাবী থানা পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। বুধবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে নিজ বাড়ীতে ন্যায় বিচার এবং আসামীদের আটকের দাবীতে এক সংবাদ সম্মেলণ করেন ঐ শিক্ষার্থী এবং তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলণে ভুক্তভুগী শিক্ষার্থীর পিতা কাবিল হোসেন জানান, আমার মেয়ে খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে উত্যাক্ত এবং কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো বাড়ীর পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি এলাকার মুন্না’র ছেলে দুই সন্তানের জনক ফিরোজ (৩৮)। আমার মেয়ে লোক লজ্জার ভয়ে চুপ করে থাকে। গত ১৫ আগস্ট সকাল ১০ টার সময় বাড়ীর সামনে রাস্তার পাশে আমার মেয়ে দাড়িয়ে ছিলো। এমন সময় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ফিরোজ এবং ইনা’র ছেলে চন্দন (২৮) ও পার্শ্ববর্তী মৃত মজিবারের ছেলে শহিদুল তাকে জোর পূর্বক সিএনজিতে তুলে খলিসাকুন্ডিতে নিয়ে যায়। এবং সেখান থেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
তবে এ ঘটনায় আমি ঐ দিন বিকেলে দৌলতপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে আমার কোন অভিযোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ। উল্টো আমাকে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নিশিকান্ত বলেন মেয়ে ফিরে না আসা পর্যন্ত কোন অভিযোগ নেওয়া যাবে না। তিন দিন ঘুরেও দৌলতপুর থানায় অভিযোগ না নেওয়ায় আমি আদালতে অভিযোগ দিয়েছি। আসামীরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবার একটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি এবং ন্যায় বিচারের দাবী করছি।
তিনি আরো দাবী করেন, আমি দৌলতপুর থানায় তিন দিন ঘুরেও অভিযোগ দিতে পারিনি। কিন্তু আদালতে অভিযোগ দেওয়ার আগে ১৮ আগস্ট রাতে দৌলতপুর থানার এসআই জিয়াউর আসামীদের সাথে টাকার বিনিময়ে একটি মনগড়া এজাহার তৈরী করেন। যা পুরোটাই পুলিশের সাজানো। পুলিশ যে এজাহার দিয়েছে আমি সেটা থানায় দাখিল করিনি। থানা পুলিশ যেটা এজাহারে উল্লেখ করেছে সে অভিযোগ আমার না।
সেই সাথে সেখানে দেওয়া টিপসই আমার না।
সংবাদ সম্মেলণে ভুক্তভুগী শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেওয়া ফিরোজের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চন্দন ও শহিদুলের সহযোগিতায় ফিরোজ আমাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ঢাকায় তার বোনের বাসায় নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক আটকে রাখে। এর মধ্যে সে জোর করে আমাকে ধর্ষণ করে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে দৌলতপুর থানার এসআই জিয়াউর রহমান জানান, এ ব্যপারে আমি কিছু বলতে পারবো না। ওসি স্যার বিষয়টি জানেন। তিনিই বলতে পারবেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার বলেন, কাবিল হোসেন যে অভিযোগ দিয়েছিলেন আমরা তার প্রেক্ষিতে মামলা গ্রহণ করে এজাহার দায়ের করেছি। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। সংবাদ সম্মেলণে পুলিশের বিরুদ্ধে কাবিলের অভিযোগ ভীত্তিহীন বলে দাবী করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে আদালতে কাবিলের করা অভিযোগ এবং দৌলতপুর থানা পুলিশের এজাহারে কোন মিল পাওয়া যায়নি।
Posted ৩:২৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
protidinerkushtia.com | faroque