পাট সোনালী আঁশ। প্রতিবছর পাট রপ্তানি করে সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে পাটের প্রয়োজন অপরিসীম। পাটের দাম ভাল থাকায় পাট চাষে আগ্রহী অনেক চাষীরা। তাই দিনাজপুরের হিলিতে পাট কেটে ডবা,নালা, খাল-বিলে জাঁগ দিয়ে পচিয়ে ধোঁলায় করতে ব্যস্ত সময় পার করছে পাটচাষীরা।
হিলির বিভিন্ন পাট জাঁগ দেওয়া স্থানে এবং পাট চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাটের বীজ বোপনের সময় এক বিঘা জমিতে ১৫ কেজি ডেব ও ১০ কেজি জিব প্রয়োগ করে জমি তৈরি করে এবং বিঘাপ্রতি এক কেজি পাটবীজ রোপন করে কৃষকরা। পাট চাষে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হয় প্রতি বিঘায়। বীজ রোপনের ১৫ দিন পর জমি নিড়ানি দিয়ে বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে। বীজ লাগানোর ৯০ দিনের মধ্যে পাট কাটার উপযুক্ত হয়ে উঠে। পাট কেটে ডবা, নালা আর খাল-বিলে তা আটিঁ বেঁধে উপরে ময়লা আবর্জনা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ১৫ থেকে ২০ দিনের মাথায় পাট পচে যায়। ব্যস্ত হয় উঠে কৃষকরা পাট ধোঁয়ায়।
পাট মানুষের মৌলিক চাহিদা পুরন করতে একটা বড় ভুমিকা রাখে। পাট থেকে সুতা, বস্তা ও হার্ডবোর্ড সহ একাধিক কাজে পাটের প্রয়োজন হয়ে থাকে। পাটকাঠি জ্বালানী কাজেও ব্যবহৃত হয়।
হিলি মুনশাপুর গ্রামের পাটচাষী আনিছুর রহমানের সাথে কথা হয়, পাচা পানিতে পাট ধোঁলায় করাবস্থায় বলেন, এইবার আমি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটের ভাল ফলন হয়েছে। ১৮ দিন আগে পাট জাঁগ দিয়ে আজ থেকে ধোঁলায়ের কাজ শুরু করেছি। পাটের বাজার এবার ভাল আছে, প্রতি মণ ২০০০ থেকে ২১০০ টাকা। আমার দুই বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়ছে। আশা করছি প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ৯ মণ পাট পাবো। পাট শুকিয়ে তা বাজারজাত করবো। তা থেকে সংসারের অনেকটায় অভাব দুর হবে।
একজন পাট কাটা আর ধোঁলায় শ্রমিক মজিবরের সাথে কথা হয়, তিনি বলেন, আমরা পাটচাষীর নিকট দুই বেলা খেয়ে ২০ আটিঁ কাটা ৪০০ টাকা এবং ২০ আটিঁ ধোঁওয়া ৪০০ টাকা করে নেই।
তিনি আরও জানান, দুর্গন্ধ পচা পানিতে নেমে পাট ধুঁতে হয়। আবার অনেক পোকামাকড়ও থাকে, সব মিলে সংসারে চাহিদা মিটাতে কাজ করতে হয়।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা নাজনীন জানান, এইবার পাটের চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ২২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছে কৃষকরা। পাটের ফলন ভাল হয়েছে এবং বাজারে দামও ভাল রয়েছে।