জীবন দিয়ে শেখ হাসিনাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন কুষ্টিয়ার মাহবুব বীরমুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী কুষ্টিয়ার মানুষ জীবন দিয়ে হলেও প্রমান দিয়ে গেছে তারা অকৃতজ্ঞ নাহ।
২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যখন গ্রেনেডের তান্ডব তখন শেখ হাসিনাকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দিয়ে ঘাতকের বুলেটবিদ্ধ হয়ে রাজপথে লুটিয়ে পড়েন বিশ্বস্ত দেহরক্ষী মাহবুব। নিভে যায় তার জীবন প্রদীপ। সেদিনের সেই বুলেটটি দেহরক্ষী মাহবুবকে স্পর্শ না করলে কেড়ে নিতে পারত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন।
গতকাল কুষ্টিয়ার পুরাতন আলফার মোড়ে দাদপুর সড়কে রহমান টাওয়ারের দৈনিক প্রতিজ্ঞার হল রুমে দৈনিক প্রতিজ্ঞার বার্তা সম্পাদক শেখ নাজমুল হোসেনের আয়োজনে ২১ শে আগস্টের বুলেটে নিহত মাহবুব রশীদের ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
শোকাবহ আগস্টে ও ২১শে আগস্টে শহীদদের স্মরনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী। প্রধান অতিথি তার বক্তেব্যে বলেন, মাহবুবের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামে। মাহবুবকে নিয়ে কুষ্টিয়ার মানুষ গর্ব করতে পারে। ২০০৪ সালে ২১ শে আগস্টে ছোড়া বুলেটে জীবন দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন কুষ্টিয়ার সন্তান দেহরক্ষী মাহবুব রশীদ।
গ্রেনেড হামলায় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বুলেট প্র“ফ গাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। মাহবুব তাকে গাড়িতে প্রবেশ করতে অনুরোধ জানান। কিন্তু শেখ হাসিনা মাহবুবকে চিৎকার করে বলে, ”না আমি যাবো না, ওরা মারে আমাকে মারুক।” নেত্রীর সে কথায় কান না দিয়ে মাহবুব বুক দিয়ে আগলে গাড়ির মধ্যে তাকে ঠেলে দেন। আর ঠিক এ সময় ঘাতকের একটি বুলেট তার মাথার পেছন দিয়ে প্রবেশ করে মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আরো কয়েকটি গুলি তার বুককে বিদ্ধ করে।
সেখানেই পড়ে থাকেন জননেত্রীর দেহরক্ষী মাহবুব। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সব চেষ্টা বিফল হয়। ২১ আগস্ট রাতেই মাহবুব মারা যান। ১৬ বছর পর, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আবার ভাইদের কাছে ঋণী হয়েছেন শেখ হাসিনা। সেদিনকার হামলা আরো ভয়ানক ছিলো। গুলির পাশাপাশি ছিলো আর্জেস গ্রেনেড।
তুমুল বিস্ফোরণেও শেখ হাসিনার ভাইয়েরা ভুলে যায়নি তাদের প্রতিজ্ঞা। শরীরে অজস্র স্পিলন্টার আর বুলেটের গর্ত নিয়েও দাঁড়িয়ে ছিল এক মানব দেওয়াল। মৃত্যু দিয়ে শেখ হাসিনার নিশ্চিত মৃত্যুকে ফিরিয়েছিলেন তারা। তাদের ঋন কখনো শোধ হবার নয়। আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিজয় নিউজ টিভির চেয়ারম্যান ও বিজয়নিউজ২৪ এর সম্পাদক শামসুল আলম স্বপন, দৈনিক প্রতিজ্ঞার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, গড়াইনিউজ২৪.কম এর সম্পাদক ও প্রকাশক এবং রেডিও জট্টিলের সিইও আতিকুজ্জামান ছন্দ, কুষ্টিয়া জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহ আলম রেজা, বিশিষ্ট লেখক ও সাহিত্যিক কুমকুম কবীর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ফারুক, মোঃ জসীম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিজ্ঞার বার্তা সম্পাদক ও সংযোগ২৪.কম এর সম্পাদক ও প্রকাশক শেখ নাজমুল হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রত্যয় যুব সংঘের সভাপতি এস এম সুমন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন খালিদ সাইফুল, তৌকির আহমেদ, বেনজির পারভীন, তামজিদ বিশ্বাস তনু, সুমন, রাব্বী, বিজয়, রুবেল, ইমন, রায়হান, সাব্বির, ফয়সালসহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের আলোচনা সভা শেষে শোকাবহ আগস্ট ও ২১শে আগস্টের শহীদদের স্মরনে দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা আবুল খায়ের।
Posted ২:৪৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ আগস্ট ২০২০
protidinerkushtia.com | editor